রাষ্ট্রপতিকে আদেশ ! সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা কতদূর?
উপ-রাষ্ট্রপতির প্রশ্ন: “Article 145(3) দিয়ে কি তিন বিচারপতির বেঞ্চ সংবিধান ব্যাখ্যা করতে পারে?"
বিশেষ প্রতিনিধি
লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে ওয়াকফ সংশোধনী বিল ইতিমধ্যেই আইনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই আইনের একাধিক ধারা নিয়ে আপাতত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে জবাবদিহির সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
এই ঘটনাকে ঘিরেই ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছেন—“সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রপতির মতো একজন সাংবিধানিক প্রধানকে আদেশ দিতে পারে কি?”
তিনি Article 145(3)-এর ব্যাখ্যার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “এটি যেন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকা নিউক্লিয়ার মিসাইল হয়ে উঠেছে, যা বিচারব্যবস্থাকে একটি ‘সুপার পার্লামেন্টে’ পরিণত করছে!”
কি বলেছেন উপ-রাষ্ট্রপতি?
"আপনারা রাষ্ট্রপতিকে আদেশ দিতে পারেন না!"
রাষ্ট্রপতি হলেন দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদাধিকারী, কোনও কোর্ট কেরানি নন।
Vice President Jagdeep Dhankhar questions Judiciary 🔥🔥#SupremeCourtOfIndia
— अखण्ड भारत संकल्प (@Akhand_Bharat_S) April 17, 2025
Waqf Amendment Act से सम्बंधित सुनवाई मे केंद्र ने सुप्रीम कोर्ट से कहा कि आप संसद द्वारा पारित
कानून पर रोक नहीं लगा सकते" सुप्रीम कोर्ट को सहमत होना पड़ा!
He says - "We cannot have a situation where… pic.twitter.com/oQNOfOQqE6
"Article 145(3) বলে—সংবিধান ব্যাখ্যা করতে হলে অন্তত ৫ বিচারপতির বেঞ্চ লাগবে!"
তাহলে কেন তিন বিচারপতির বেঞ্চ সংবিধানের বিষয়ে রায় দিচ্ছে?
"রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেওয়া সংবিধান লঙ্ঘনের সামিল!"
এই বিচারপতিরা কি তাহলে রাষ্ট্রপতির থেকেও ঊর্ধ্বে?
"Article 142 এখন যেন নিউক্লিয়ার মিসাইল!"
এই ধারার অপব্যবহার করে আদালত যেন নির্বাহী ও আইনসভা, দুইয়ের ভূমিকায় নেমে পড়েছে।
সংবিধানের কোন ধারা কী বলছে?
Article 145(3):
যদি কোনও মামলায় সংবিধান ব্যাখ্যার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত থাকে, তবে সর্বোচ্চ আদালতের কমপক্ষে ৫ বিচারপির বেঞ্চ গঠন আবশ্যক। এই নিয়ম অনুযায়ী ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংক্রান্ত মামলায় ৩ বিচারপির বেঞ্চে শুনানি হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে।
Article 142:
সুপ্রিম কোর্টের এমন এক বিশেষ ক্ষমতা যা "সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার" নিশ্চিত করতে যেকোনো আদেশ বা নির্দেশ জারির অধিকার দেয়। উপ-রাষ্ট্রপতি এটিকেই 'নিউক্লিয়ার মিসাইল' আখ্যা দিয়েছেন, যা নির্বিচারে প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে তার অভিযোগ।
বিচার বিভাগ কি ‘সুপার পার্লামেন্ট’?
উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় কঠোর ভাষায় বলেন,
"ভারতের গণতন্ত্র কখনও ভাবেনি যে বিচারপতিরা আইন প্রণয়ন করবেন, নির্বাহী শাখার কাজ করবেন, এবং নিজেই সুপার পার্লামেন্ট হয়ে উঠবেন!"
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে,
"এক বিচারপতির বাড়ি থেকে কোটি কোটি নগদ টাকা উদ্ধার হলেও আজ পর্যন্ত কোনো FIR হয়নি। বিচারবিভাগ এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে নিজেই তদন্ত করছে, যা নির্বাহীর কাজ। এই তদন্ত কমিটি কি ভারতের সংবিধানে কোথাও রয়েছে? না। পার্লামেন্টে কোনো আইনের মাধ্যমে এই কমিটি কি অনুমোদিত? না।"
CJI-এর ভেটো ক্ষমতা কি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি?
উপ-রাষ্ট্রপতির দাবি,
"CJI যদি সব ক্ষমতার কেন্দ্র হয়ে ওঠেন, তাহলে তা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক। বিচারপতিরা যদি রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তকেও খারিজ করে দেন, তাহলে আমাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামো কোথায় দাঁড়াবে?"
জনগণের প্রশ্ন, রাষ্ট্রের উত্তাপ
এই ঘটনাকে ঘিরে দেশজুড়ে রাজনৈতিক এবং আইনজীবী মহলে উত্তপ্ত বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় Supreme Court ও CJI সংক্রান্ত ট্যাগগুলি ট্রেন্ডিং। কিছু আইন বিশেষজ্ঞ বিচার বিভাগের পক্ষ নিয়েছেন, আবার অনেকেই ধনখড়ের বক্তব্যকে গণতন্ত্র রক্ষার সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছেন।
এই বিতর্ক শুধুমাত্র আদালতের একটি সিদ্ধান্ত বা একটি আইনের ব্যাখ্যা নিয়ে নয়—এটি ভারতের সাংবিধানিক কাঠামো, ক্ষমতার ভারসাম্য, এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যত নিয়ে এক গভীর প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিচ্ছে। রাষ্ট্রপতি, সংসদ ও সুপ্রিম কোর্ট—এই তিনটি স্তম্ভের মধ্যে কার কতটা ক্ষমতা, কে কতটা সীমিত—এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো আগামী দিনে ইতিহাস নির্ধারণ করবে।
📱 #SCvsVP #ConstitutionalCrisis #WaqfBillControversy