ওয়াকফ (সংশোধন) আইনের পক্ষে দাঁড়াল উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ড : সুপ্রিম কোর্টে হস্তক্ষেপের আবেদন
উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ডের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন, সংবিধানিক চ্যালেঞ্জের মুখে নতুন আইনের পক্ষে সাফাই
নতুন ওয়াকফ (সংশোধন) আইন ২০২৫ নিয়ে যখন দেশজুড়ে প্রতিবাদ, তখন বিপরীত পথে হাঁটল উত্তরাখণ্ড। ওয়াকফ আইনের পূর্ণ সমর্থনে সুপ্রিম কোর্টে হস্তক্ষেপের আবেদন করল উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ড। AIMIM সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দায়ের করা রিট মামলায় বোর্ড নিজেদের পক্ষ থেকে আইনি ও তথ্যভিত্তিক যুক্তি তুলে ধরতে চায় বলে জানানো হয়েছে।
বোর্ডের বক্তব্য, উত্তরাখণ্ডে ৫,৩১৭টি ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে, যার ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার দায়িত্ব তাদের হাতে। বহু সম্পত্তি ভুয়ো ঘোষণা ও অবৈধ দখলের অভিযোগে জর্জরিত। তাই সংশোধিত আইনটি এই অনিয়ম রোধে কার্যকর হবে বলেই তাদের দাবি।
প্রভাবশালী ও ধনী মুসলিমদের কবলে : শাদাব শামস
উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান শাদাব শামস এক বিবৃতিতে বলেন, "ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি বহুদিন ধরে প্রভাবশালী ও ধনী মুসলিমদের কবলে ছিল। নতুন আইন তাদের হাত থেকে সম্পত্তি মুক্ত করবে এবং গরিব মুসলিমদের উপকারে আসবে।" তিনি আরও বলেন, "নরেন্দ্র মোদী গরিব মুসলিমদের দুঃখ বুঝেছেন বলেই এই সংশোধন এনেছেন।"
VIDEO | Here's what Uttarakhand Waqf Board Chairman Shadab Shams said on the Supreme Court hearing pleas against constitutional validity of the Waqf (Amendment) Act, 2025.
— Press Trust of India (@PTI_News) April 16, 2025
"The Supreme Court hearing on pleas challenging the constitutional validity of the Waqf (Amendment) Act,… pic.twitter.com/DEcbM84RYp
অবৈধ দখল
তিনি দাবি করেন, বহু পসমান্দা মুসলিম তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আইন পাশ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শামস বলেন, "তাঁরা মনে করেন কংগ্রেস শাসনের সময় তাদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের অবসান ঘটাবে এই আইন।" পাশাপাশি তিনি হুঁশিয়ারি দেন, "যারা ওয়াকফ সম্পত্তিতে অবৈধ দখল করে বসে আছে, তারা মিথ্যা রটনা ছড়াচ্ছে—লোকেদের বোঝাচ্ছে যে এই আইন তাদের জমি কেড়ে নেবে।"
এদিকে আইনটি সংবিধান-বিরোধী বলে দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। এই আবেদনে নিজেদের বক্তব্য রাখতে চেয়ে হস্তক্ষেপের অনুমতি চেয়েছে উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ড।
আইন ঘিরে বিক্ষোভ
যেখানে দেশের বিভিন্ন অংশে এই আইন ঘিরে বিক্ষোভ চলছে—বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে মুর্শিদাবাদে উত্তেজনার পারদ চড়ছে, সেখানে উত্তরাখণ্ডের এই অবস্থান কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে এক বড় বার্তা। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বলেছিলেন, “বাংলা জ্বলছে আর মুখ্যমন্ত্রী চুপ করে বসে আছেন।” শুভেন্দু অধিকারীও মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে বারবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
রাজনীতিকে নতুন মাত্রা
নতুন ওয়াকফ আইনকে ঘিরে একদিকে রাজ্য বনাম কেন্দ্রের সংঘাত, অন্যদিকে সংখ্যালঘু সমাজের ভেতর বিভাজন—এই দুটি দিকই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। উত্তরাখণ্ডের অবস্থান সেই বিভাজনের রাজনীতিকে নতুন মাত্রা দিল বলেই মত বিশ্লেষকদের।
সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানিতে বোর্ডের হস্তক্ষেপ মঞ্জুর হলে ওয়াকফ আইন নিয়ে বিতর্ক আরও জোরালো হওয়ার সম্ভাবনা।