‘আপনি তো প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না’ — অমিত শাহকে কটাক্ষ করে বিস্ফোরক আক্রমণ মমতার
অমিত শাহের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ওয়াকফ আইন ঘিরে আয়োজিত বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক আক্রমণ শানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে। তাঁর অভিযোগ, মুর্শিদাবাদ, সূতি, ধুলিয়ান ও সামশেরগঞ্জে যেসব হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, তা পূর্বপরিকল্পিত এবং এর পেছনে মূল হোতা স্বয়ং অমিত শাহ।
“আপনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না” — কটাক্ষে কাঁপালেন মঞ্চ
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ স্পষ্ট ছিল:
"আপনি তো প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। হামাগুড়ি দিতে হবে আপনাকে। তখন কী করবেন?"
এ বক্তব্যকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দেখছেন একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক আক্রমণ হিসেবে, যার লক্ষ্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার লড়াইকে আরও সামনে আনা।
Mamata Banerjee ने Amit Shah पर साधा निशाना
— News18 India (@News18India) April 16, 2025
ममता ने PM से की अपील
'अपने लोगों को कंट्रोल करें'#mamatabanerjee #murshidabadviolence #amitshah #pmmodi pic.twitter.com/urjeucnjPp
বিজেপিকে তুলোধনা, সংবিধান মানছে না বলে অভিযোগ
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ওয়াকফ বিলকে সংসদে পাশ করাতে গিয়ে বিজেপি শরিকদের জোর করে রাজি করিয়ে এনেছে। সংবিধান সংশোধন ছাড়াই এই আইন পাস হয়েছে, যা ভারতীয় সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারার সরাসরি লঙ্ঘন। তাঁর বক্তব্য:
"ভারতের নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। বিজেপি সংবিধানকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করছে। লজ্জা করা উচিত ওদের।"
মঞ্চে সংখ্যালঘু, শিখ ও হিন্দু পুরোহিত — শান্তির ‘ছবি’
ওয়াকফ আইন নিয়ে বাংলায় যে হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তার বিপরীতে শান্তির বার্তা দিতে মুখ্যমন্ত্রী পাশে বসালেন ইমাম, মোয়াজ্জেমের সঙ্গে শিখ গুরু এবং হিন্দু পুরোহিতদের। রাজনৈতিক মহল বলছে, এটি ছিল একটি কৌশলী পদক্ষেপ — রাজ্যে সাম্প্রদায়িক ঐক্যের বার্তা দেওয়া ও রাজনৈতিক প্রতিচ্ছবি নির্মাণ।
বিজেপির পাল্টা: “প্ররোচনা ও নাটকের মঞ্চ বানানো হয়েছে”
বিজেপি এই মঞ্চকে “প্ররোচনামূলক ও নাটকীয়” বলে কটাক্ষ করেছে। তাদের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকে রাজনীতির হাতিয়ার বানিয়ে ভোটব্যাঙ্ককে রক্ষা করতে চাইছেন। এক বিজেপি নেতা বলেন:
“বাংলায় অশান্তি ঘটেছে, পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল, আর মুখ্যমন্ত্রী নাটক করছেন। এগুলো ভোটের রাজনীতি ছাড়া কিছু নয়।”
বাংলাদেশ থেকে লোক এনে গোলমাল? — বিতর্কিত দাবি
মমতার এক মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। তাঁর অভিযোগ:
“বাংলাদেশ থেকে লোক এনে এই গোলমাল করা হয়েছে।”
এই মন্তব্য যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছে বিরোধী মহল। কারণ এতে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব পড়তে পারে।
মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া, এবং ‘ভুয়ো খবর’ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে “গদি মিডিয়া” ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন। তিনি দাবি করেন, বিজেপি টাকার জোরে বাংলা ও তাঁর সরকারের বদনাম করছে।
রাজনৈতিক সংঘাতের আগুনে পুড়ছে বাংলা
যেখানে রাজ্যে শান্তি ফেরানোই মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম কাজ হওয়া উচিত, সেখানে মঞ্চ থেকে কড়া ভাষায় আক্রমণ, বিদেশি অনুপ্রবেশের অভিযোগ, এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকা ব্যক্তিকে এভাবে ব্যক্তিগতভাবে কটাক্ষ — সব মিলিয়ে রাজনীতিকে উত্তপ্ত করল এই ঘটনা।
প্রশ্ন থেকে যায়:
এই আক্রমণের ফলে কি বাংলায় শান্তি ফিরবে?
নাকি এই উত্তেজনার রাজনীতি রাজ্যকে আরও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে?
আপনার মতামত কী? এই বক্তব্য কি রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য? মতামত জানান নিচে কমেন্টে।