'কলকাতায় থাকলে এক মিনিটেই সমস্যার সমাধান করে দিতাম ', অসীম বিভ্রান্তীর মধ্যে চাকরিহারাদের আশ্বাস মমতার
মমতার আশ্বাসে চাকরিহারাদের মনে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—সমাধান কবে?
কলকাতা,নিজস্ব সংবাদদাতা , মানুষের ভাষা :
“কলকাতায় থাকলে এক মিনিটেই সমস্যার সমাধান করে দিতাম”— মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য ঘিরে আলোড়ন।
নিয়োগ দুর্নীতির জাঁতাকলে পিষ্ট হাজার হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা। ওএমআর শিট ও যোগ্য-অযোগ্য তালিকা প্রকাশের দাবিতে চলেছে টানা আন্দোলন। রাতভর এসএসসি ভবনের সামনে ধর্না, গরমে ও অনাহারে কাটছে দিনরাত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিল হওয়া হাজার হাজার শিক্ষক এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে। সরকারের আশ্বাস মিললেও বাস্তবে এখনও সমাধান অধরাই।
এই পরিস্থিতিতেই মঙ্গলবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠে এক প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি আর্জি জানান—চাকরিহারারা যেন কাজে ফিরে যান। তিনি বলেন,
“কেন গরমে বসে আছেন? আপনারা স্কুলে যান। নিশ্চিন্তে ক্লাস করুন। বাকি দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। বেতন বন্ধ হয়নি। কলকাতায় থাকলে এক মিনিটে সমস্যার সমাধান করে দিতাম।”
@MamataOfficial appealed to protesting teachers to return to work, assuring salaries and warning against being misled. As the #SSC protest continues#WestBengal pic.twitter.com/41nYa3porT
— Taaza TV (@taazatv) April 22, 2025
"আমরা তো আদালতে গেছি- চিন্তা করবেন না"
“আপনারা বেতন পাবেন। সুপ্রিম কোর্ট চাকরি বাতিল করেছিল, আমরা তো আদালতে গেছি। আইনজীবীদের মতামত অনুযায়ী সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। উত্তেজিত হওয়ার কিছু নেই। গ্রুপ সি-ডি যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁরাও চিন্তা করবেন না।”
এদিকে আন্দোলনকারীদের দাবি—তালিকা প্রকাশ না হলে তাঁরা কর্মস্থলে ফিরবেন না। বঞ্চিত শিক্ষকরা স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, তারা চান বাস্তবিক প্রমাণ।
এসএসসি আগেই কথা দিয়েছিল যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের। কিন্তু সোমবার নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও কোনও তালিকা প্রকাশিত হয়নি। ফলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন আন্দোলনরত চাকরিহারারা। তাঁরা বলছেন, “মৌখিক আশ্বাসে আর বিশ্বাস নেই। তালিকা চাই, নাহলে আন্দোলন চলবেই।”
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু - ১৭,২০৬ জন চাকরিপ্রাপ্ত অযোগ্য তালিকায় নেই
“আইনি পরামর্শ না পাওয়ায় সোমবার তালিকা প্রকাশ করা যায়নি। তবে কাউন্সেলিং সংক্রান্ত বিভ্রান্তি দূর করতে চাই। ১৭,২০৬ জন চাকরিপ্রাপ্ত অযোগ্য তালিকায় নেই—এটা নিশ্চিত। বাকিদেরও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।”
ব্রাত্য বসু আরও বলেন,“চাকরিহারাদের পাশে রাজ্য সরকার রয়েছে। বিরোধীরা শুধু উস্কানি দিচ্ছে, তারা কিন্তু বেতন দেবে না। সরকারই তাদের বেতন দেবে।”
তবে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন—তিনি যদি এতটাই সমাধানমুখী হন, তাহলে কলকাতায় না থেকেও কেন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না? কেন বারবার আশ্বাসে আটকে থাকছে চাকরির ভবিষ্যৎ?
চাকরি হারিয়ে আন্দোলনে নেমে আসা এক শিক্ষিকা বলেন,
“আমরা শুধু একটা প্রমাণ চাই—আমরা যোগ্য, সেটা লিখিতভাবে জানাক সরকার। তা না হলে আন্দোলন চলবে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃঢ় বার্তা কিছুটা আশার আলো জাগালেও আন্দোলনকারীদের দৃষ্টিতে এখনও তা ‘অন্তঃসারশূন্য প্রতিশ্রুতি’। সময়ই বলবে, এই টানাপোড়েনের ইতি কবে টানা যাবে।
#মমতা_বন্দ্যোপাধ্যায়, #SSC_দুর্নীতি, #চাকরিহারা_শিক্ষক, #SSC_নিয়োগ, #ওএমআর_শিট, #যোগ্য_অযোগ্য_তালিকা, #ধর্না_আন্দোলন, #ব্রাত্য_বসু, #শিক্ষক_আন্দোলন, #পশ্চিমবঙ্গ_সরকার, #নিয়োগ_বিতর্ক, #SupremeCourt, #চাকরি_বাতিল, #রাজ্য_রাজনীতি, #শিক্ষা_দপ্তর