ভারতের সঙ্গে ফের মিলনের ইচ্ছা PoK-র ? অমিত শাহের দাবির পর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বড় সিদ্ধান্ত
বিশেষ প্রতিবেদন
"PoK হামারা হ্যায়!" — অর্থাৎ, "পাক অধিকৃত কাশ্মীর আমাদের" — এই জোরালো বার্তাই সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যম আয়োজিত সামিটে দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেন, কেন্দ্রীয় সরকার শীঘ্রই পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর পুনরুদ্ধারের পথে অগ্রসর হবে। যদিও নির্দিষ্ট সময় জানাননি তিনি, তবে দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন, PoK ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং সরকার এই ন্যায্য দাবিকে প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
PoK is ours—and leaders like #AmitShah never hesitate to say it loud. This is why the nation stands firmly behind this government. 🔥 pic.twitter.com/0qpTptQwLa
— Swetha Shrinivasan (@The_real_Swetha) April 10, 2025
অমিত শাহের এই দাবির পরেই PoK থেকে উঠে এল চমকপ্রদ খবর।
ইতিহাসে নজিরবিহীনভাবে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা প্রকাশ্যে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করলেন। তারা জানিয়ে দিলেন, পাকিস্তান সরকার এবং সেনাবাহিনীকে আর তাদের জমি সন্ত্রাস ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করতে দেবেন না। দীর্ঘদিন ধরে ভারতবিরোধী প্রক্সি যুদ্ধ চালানোর জন্য PoK-র মাটিকে ব্যবহার করে আসছে পাকিস্তান, এই অভিযোগে এবার নিজেরাই রুখে দাঁড়ালেন সাধারণ মানুষ।
এই অবস্থান কাঁপিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে শুরু করে জঙ্গি সংগঠনগুলিকে। পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ থেকে শুরু করে লস্কর-ই-তইবা প্রধান হাফিজ সঈদ ও জইশ-ই-মহম্মদের নেতা মাসুদ আজহারের মতো জঙ্গি নেতারাও এই প্রবল জনমত দেখে উদ্বিগ্ন।
গত চার বছরে পাক সেনা ও সরকারের দমননীতিতে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছেন PoK-র নাগরিকরা। বিনা কারণে গ্রেফতার, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অভিযোগে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। এই ক্ষোভ এখন পরিণত হয়েছে প্রতিরোধে। পরিস্থিতি এমন যে, পাক সেনা এবং সাধারণ মানুষ মুখোমুখি সংঘর্ষের সম্ভাবনার দিকে এগোচ্ছে।
এই উত্তাল পরিস্থিতিতে PoK-র রাজনীতিতে শক্তি অর্জন করছে আওয়ামি অ্যাকশন কমিটি নামক একটি সংগঠন। সংগঠনের শীর্ষ নেতা সর্দার লিয়াকত সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন যেমন লস্কর-ই-তইবা বা জইশ-ই-মহম্মদকে তারা আর বৈঠক করতে দেবে না রাওয়ালকোটে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ১৮ এপ্রিল রাওয়ালকোটে লস্কর-ই-তইবার একটি বড় সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল, যেখানে ভারতের সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত জঙ্গি আকিফ হালিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হতো। তবে এবার স্থানীয় রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, জঙ্গিদের এই সম্মেলন হতে দেওয়া হবে না।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি বড় বার্তা। সন্ত্রাস থেকে বেরিয়ে এসে PoK-র মানুষ এবার শিক্ষা, শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির আলোয় ফিরতে চাইছেন। বন্দুক নয়, তারা চাইছেন বই। সন্ত্রাস নয়, তারা চাইছেন ভারতের সঙ্গে পুনর্মিলনের পথ।
এই পরিবর্তন শুধু দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক মানচিত্রে নয়, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেও এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে।