১৪ মে দেশের ৫২তম প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন বি আর গাভাই
দ্বিতীয় তফসিলি জাতিভুক্ত সিজেআই, ১৪ মে শপথ, ২৩ নভেম্বর অবসর
আজ এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপে ভারতের বর্তমান প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India), বিচারপতি সঞ্জীব খান্না সরকারকে সুপারিশ করেছেন বিচারপতি ভূষণ রামকৃষ্ণ গাভাইকে দেশের ৫২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য। শপথ নেবেন ১৪ মে, এবং দায়িত্ব পালন করবেন ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত—তার ৬৫তম জন্মদিন পর্যন্ত।
বিচারপতি গাভাই এই দায়িত্ব পেলে তিনি হবেন ভারতের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় তফসিলি জাতিভুক্ত প্রধান বিচারপতি। এর আগে বিচারপতি কে জি বালাকৃষ্ণন ২০০৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
বিচারপতি গাভাই কে?
১৯৬০ সালের ২৪ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে জন্ম গ্রহণ করেন বিচারপতি গাভাই। ১৯৮৫ সালে আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করেন এবং ১৯৮৭ সালে বোম্বে হাইকোর্টে স্বাধীন প্র্যাকটিস শুরু করেন। সংবিধান ও প্রশাসনিক আইন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে তিনি একাধিক সরকারি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেন।
১৯৯২ সালে নাগপুর বেঞ্চে সহকারী সরকারী আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০০০ সালে হয়ে ওঠেন পূর্ণাঙ্গ সরকারী আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটর। ২০০৩ সালে বোম্বে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন এবং ২০০৫ সালে স্থায়ী বিচারপতি হন। সুপ্রিম কোর্টে পদোন্নতি হয় ২০১৯ সালের ২৪ মে।
গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক রায়ে অবদান
বিচারপতি গাভাই সুপ্রিম কোর্টের একাধিক সাংবিধানিক বেঞ্চে ছিলেন, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য:
- ধারা ৩৭০ বিলুপ্তি: ২০২৩ সালে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের সদস্য হিসেবে তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে একমত হন।
- নির্বাচনী বন্ড বাতিল: আরেক পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের অংশ ছিলেন, যেটি রাজনৈতিক অর্থায়নের এই বিতর্কিত স্কিম বাতিল করে দেয়।
- নোটবন্দির বৈধতা: ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকেও ৪:১ রায়ে সমর্থন জানিয়েছিলেন তিনি।
দায়িত্বকাল ও উত্তরসূরি
বর্তমান প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, যিনি ২০২৪ সালের ১০ নভেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, আগামী ১৩ মে অবসর নেবেন। এরপর ১৪ মে থেকে বিচারপতি গাভাই নতুন দায়িত্ব নেবেন। তাঁর মেয়াদ থাকবে ছয় মাসেরও কিছু কম, অর্থাৎ ২৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত।
বিচারপতি গাভাইয়ের নিয়োগ শুধু বিচার বিভাগে যোগ্যতার স্বীকৃতি নয়, এটি ভারতের বিচারিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক ন্যায় ও অন্তর্ভুক্তিরও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। দেশে ন্যায়বিচারের ইতিহাসে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে।