নির্বিকার মোদী-শাহ আর অপদার্থ বঙ্গ বিজেপি , দেশের বিপদে একটা শোক দিবস করতে পারলো না ? আশা শুধু আকাশে শুভ ইন্দু
বাংলার বিরোধী রাজনীতির শেষ আশা - শুধু শুভেন্দু
সম্পাদকীয় - প্রবীর রায় চৌধুরী
এই সম্পাদকীয়তে যা রয়েছে তা সংক্ষেপে:
- আক্রান্ত মাতৃভূমি- হিন্দু নিধনই মূল উদ্দেশ্য
- মোদী-শাহ তৎপরতা
- একক লড়াই শুভেন্দুর - পথে বিছানো কাঁটা
- কেন্দ্রের নিঃশব্দ , নির্বিকার ভূমিকা
- বাংলা জেহাদিদের টার্গেট
- কেন্দ্রের নির্বিকার ভূমিকার রহস্যটা কি ?
- সবাইয়ের থেকে অনেক বেশি ক্ষমতাশালী মমতা ব্যানার্জি
আক্রান্ত মাতৃভূমি- হিন্দু নিধনই মূল উদ্দেশ্য
গতকাল দুপুরে সারা দেশ স্বাক্ষী থেকেছে এক হৃদয় বিদারক মর্মান্তিক জঙ্গী হানার , যেখানে পাকিস্তানি জেহাদি জঙ্গীদের একমাত্র নিশানা ছিল হিন্দুরা। নিরীহ তীর্থযাত্রী , পর্যটকরা একে একে রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েছে ভূস্বর্গের মাটিতে। স্তম্ভিত , হতবাক হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব।আক্রান্ত হয়েছে আমাদের মাতৃভূমি।
এতদিনের মধ্যে এই জঙ্গী আক্রমণ চরিত্রের দিক থেকে অনেকটাই আলাদা। কারণ এখানে টার্গেট করা হয়েছে শুধুমাত্র হিন্দুদের। অর্থাৎ হিন্দু নিধনই ছিল এই আক্রমণের মূল উদ্দেশ্য। তার জন্য নিজের স্ত্রীদের সামনে নিম্নাঙ্গের বস্ত্র খুলিয়ে জঙ্গিরা পরীক্ষা করেছিল কে কে হিন্দু। যাকে হিন্দিতে বলে "চুন চুন কর মারা" - মানে , বেছে বেছে মারা।
মোদী-শাহ তৎপরতা
ঘটনার তীব্রতা এতটাই ছিল যে প্রধানমন্ত্রী মোদী সৌদি আরব সফর অসম্পূর্ন রেখে রাতেই রওনা হন দেশের পথে , আসার আগে ফোন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নির্দেশ দেন পাহেলগাঁও যেতে, ও যা যা প্রয়োজন সব রকম উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। রাত পার হলো সেনাবাহিনীর নিশ্ছিদ্র তল্লাশি অভিযান ও অসীম আতঙ্কে। ভোর হতেই প্রধানমন্ত্রী দেশে পৌঁছে গাড়িতে করে তার অফিসে না গিয়ে এয়ারপোর্টেই হাতছানি দিয়ে ডেকে নেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে। এয়ারপোর্টেই বসেন জরুরি মিটিংয়ে। ইতিমধ্যেই রাশিয়া , আমেরিকা সহ অগ্রণী সমস্ত দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা মোদিকে ফোন করে এই ঘটনার নিন্দা করেন ও ভারতের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এই তৎপরতা সাধুবাদযোগ্য।
একক লড়াই শুভেন্দুর - পথে বিছানো কাঁটা
এবার লক্ষ করা যাক রাজ্যের পরিস্থিতির দিকে। সদ্য সংসদে পাশ হয়ে আইনে পরিণত হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী বিল এবং তাই নিয়ে মুসলিম সমাজের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে এরাজ্য। মালদা , মুর্শিদাবাদে সেই আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন কার্যত হিন্দু নিধন যজ্ঞে পরিণত হয়। রাজ্য পুলিশের হিম্মত হয়নি এই অসহিষ্ণু পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার। হাইকোর্টের নির্দেশে নাম আধা সেনা। ততক্ষনে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে।বাধা পাওয়া সত্ত্বেও দুর্গত এলাকায় বারবার ছুতে গেছেন বিজেপি নেতা তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
প্রশ্নটার জন্ম এসবের মধ্যে থেকেই - গতকালের এই বীভৎস মর্মান্তিক হিন্দু নিধনের পর যেখানে সারা পৃথিবী নিন্দা মুখর , শোকে মুহ্যমান , সেখানে এরাজ্যের বিজেপির এখনো সময় হলোনা সারা রাজ্যের দিকে দিকে শোক মিছিল / মোমবাতি মিছিল আয়োজন বা , রাস্তার মোড়ে মোড়ে শোকসভা আয়োজন করার।এতো অবিন্যস্ত একটা
বিরোধী দল ? একজন মানুষ এক কুম্ভের মতো চরৈবতি বলে এগিয়ে চলবেন আর বাকিরা ? দোহাই দেবেন ওপরের নির্দেশ আসেনির ?
নিকুচি করেছে ওরকম নির্দেশের , আর যদি বা শোক মিছিল করতে পারতেন কেন্দ্র নেতৃত্ব কি আটকাতো ?
কেন্দ্রের নিঃশব্দ , নির্বিকার ভূমিকা
সাম্প্রতিক অসংখ্য ঘটনাবলীতে এরাজ্যের বাঙালি কেন্দ্রের নিঃশব্দ , নির্বিকার ভূমিকায় যারপরনাই হতাশ। বাতাসে উড়ছে একাধিক তত্ত্ব - তার মধ্যে সেটিং একটা , নিজের দলের অন্তর্কোন্দল আরেকটা। এক শুভেন্দু অধিকারী যেখানে যান , সেখানে কিছু উৎসাহ ও আন্দোলন হয় , বাকিটা ?
কেউ ব্যক্তিগত জীবনের কিছু আচমকা সিদ্ধান্ত দিয়ে উত্তপ্ত আন্দোলন থেকে মিডিয়ার নজর ঘোরাতে ব্যস্ত , আবার কেউ এই দফতর সেই দফতরে ৫০-১০০ জন লোক নিয়ে ধর্ণা দিয়েই নিজের কাজ সারলেন। অগ্রণী সাংবাদিক ও ইউটিউবার সন্মায় ব্যানার্জী তার অনুষ্ঠানে একবার নয় একাধিক বার এ নিয়ে সমলাচনায় মুখর হয়েছেন
, তিনি যে এদের অপদার্থ বলেছেন - বোধহয় ভুল বলেননি।
বাংলা জেহাদিদের টার্গেট
কেন্দ্রের নির্বিকার ভূমিকার রহস্যটা কি ?
আর মোদী-শাহ জুটি কেও জানতে হবে নিঃশব্দে আর নয় এবার স্বশব্দে এই বাংলা জেহাদিদের টার্গেট। তার পটভূমি ও ইতিহাস সকলের জানা। দেশীয় নিরাপত্তার সঙ্গে এতটা আপোষ কি ঠিক হচ্ছে ? যেখানে এই বাংলার বিভিন্ন বর্ডার এলাকা বাংলাদেশী ও পাকিস্তানি জঙ্গিদের আত্মগোপন , প্রশিক্ষণ ও সাম্রাজ্য বিস্তারের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়ে উঠেছে ? শাসক তৃণমূলের সাথে , বললে ভালো মমতা ব্যানার্জির সাথে কৌশলের খেলায় বার বার দশগোল খেতে বাধ্য করছে কারা ? অনেক কম অভিযোগে কেজরিওয়াল , বা হেমন্ত সোরেন যখন কেন্দ্রের কৌশলে নাস্তানাবুদ হয় তখন এরাজ্যের দিকে তাকালে উল্টো চিত্র। একের পর এক দুর্নীতি , মামলা , হাইকোর্ট , সুপ্রিমকোর্টে অনুকূল রায় , ইডি , সিবিআই তৎপরতা - ব্যাস , তারপরেই কোন জাদু বলে সব একে একে জামিন , আর তারিখ পে তারিখ।
সবাইয়ের থেকে অনেক বেশি ক্ষমতাশালী মমতা ব্যানার্জি
তারমানে , মোদী-শাহ , হাইকোর্ট , সুপ্রিমকোর্ট রাষ্ট্রপতি সবাইয়ের থেকে অনেক বেশি ক্ষমতাশালী মমতা ব্যানার্জি। প্রমাণিত। আপনারাই প্রমান করছেন। এবার না ভাবলে , নিচুস্তর থেকে উঁচুস্তর পর্যন্ত সংগঠনে গতি না আনলে , আর অপদার্থ জেলা , মন্ডল সভাপতি পরিবর্তন করে সত্যিকারের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার থেকে লড়াকু মুখকে দায়িত্ব না দিলে ২৬ এর আশা না করে ভালো।
যে জন্য এই এতো কথা - দেশের প্রতি এই আক্রমণের আবেগকে কাজে লাগিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন না হোক শোক সভা করলে আপনাদের কে আটকাতো ? উজ্জীবিত লড়াই করার আগে কালনেমির লঙ্কা ভাগে বসলে তাদের ধান্দাবাজ বলে। আর কি জানেন , মানুষ সেই ধরণের লড়াকুকে বিশ্বাস করে আশ্রয় বলে মনে করে। মেকাপ করে হেয়ারস্টাইল ঠিক করতে করতে হাঁটা কাগুজে বাঘকে রাত দুটোয় অয়াম্বুলেন্সের জন্য ফোন করেনা। ওহ , থুড়ি ! ভুল বললাম - আপনাদের তো ফোন বিপদের সময় হয় বন্ধ থাকে , নয়ত তোলেন না। ফাঁকা মাঠে ওয়াক ওভার দিয়ে দিলেই পারেন। আশা জাগিয়ে ভোটে নামার কি দরকার ?
ফেসবুক , টুইটার, আর সেলফি নিয়েই থাকুন , তাতেও তো একটা পোস্ট করলে ১০০ তাতে ভিউ আসেনা।