"হিন্দুদের মৃত্যু নিয়েও রাজনীতি! সামসেরগঞ্জ কাণ্ডে সেলিম ও সিপিএমকে তুলোধোনা বিজেপির"
সামসেরগঞ্জের সাম্প্রদায়িক হিংসায় নিহত হিন্দু পিতা–পুত্রকে নিজেদের পার্টির কর্মী বলে দাবি করে বিতর্কে ঘৃতাহুতি দিল সিপিএম। সেই সূত্র ধরেই মুখ খুললেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সিপিএম ও তাদের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে নিশানা করে দিলীপ ঘোষ সোজাসুজি বললেন,
"এরা কত বজ্জাত, মারা গেছে সেখানেও পার্টির রং ঢোকাচ্ছে, বলছে না যে হিন্দু মারা গেছে।"
জনাব মহম্মদ সেলিম সাহেব, ধরে নিলাম যে মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জ ব্লকের জাফরাবাদে নিহত পিতা-পুত্র দ্বয়; শ্রী হরগোবিন্দ দাস ও শ্রী চন্দন দাস আপনাদের দলীয় কর্মী ছিলেন।
— Suvendu Adhikari (@SuvenduWB) April 15, 2025
কিন্ত তাঁদের হত্যা করা হলো কেন?
আপনি বলছেন ওনারা দাঙ্গা রুখতে গেছিলেন!
কিন্তু আপনার বক্তব্য ও পরিবারের… pic.twitter.com/FnrUJa4ImB
দিলীপ ঘোষ আরও বলেন,
"এই সিপিএমকেই মানুষ ঝাড়ু মেরে তাড়িয়েছে, কারণ এরা হিন্দুদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। মুসলিম ভোটের লোভে ৩৫ বছর ধরে জেহাদিদের মদত দিয়েছে। এখন মুসলিম ভোট হারিয়ে ভিখারির মতো ঘুরে বেড়ালেও অভ্যাস পাল্টায়নি। আজও বলছে না, হিন্দু মারা গেছে। বলছে পার্টির কর্মী মারা গেছে। কিসের কর্মী? ওদের তো আর পার্টিই নেই!"
1.1 On Bengali New Year’s Day, we used to hear songs of Rabindranath & Nazrul —now all around us,we hear sounds of bombs & guns.
— Dilip Ghosh (Modi Ka Parivar) (@DilipGhoshBJP) April 15, 2025
Can there be a day more unfortunate than this?
West Bengal,the homeland for Bengali Hindus, where Hindus are unable to live safely on their own land pic.twitter.com/fdrNrTdgPt
তিনি বলেন, "দেশ ভাগের সময় সোহরাবর্দির সঙ্গেও ওরাই ছিল, সব সময় হিন্দুদের বিরুদ্ধে। এখন যারা ওদের ভোট দেয়, তাদের চিন্তাভাবনা করা উচিত যে তারা দেশদ্রোহী পার্টিকে সমর্থন করছে কিনা।"
সেলিমের "রাজনৈতিক লীলাখেলা" ফাঁস করলেন শুভেন্দু
এদিকে, সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বক্তব্যে আরও বিতর্ক দানা বেঁধেছে। সেলিম বলেছিলেন, "হরগোবিন্দ ও চন্দন দাস দাঙ্গা থামাতে গিয়েই প্রাণ হারিয়েছেন।" এই দাবির বিরোধিতা করে শুভেন্দু অধিকারী ফেসবুক পোস্টে প্রশ্ন তোলেন—
"আপনি বলছেন ওনারা দাঙ্গা থামাতে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরিবারের এফআইআরে লেখা আছে ওনাদের বাড়ি থেকে টেনে বের করে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। তাহলে সিপিএম কীভাবে দাবি করছে ওনারা কর্মী ছিলেন এবং দাঙ্গা থামাতে গিয়েছিলেন?"
তিনি এ-ও লেখেন,
"এটা একটা সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড। শুধু নাম ছিল হরগোবিন্দ ও চন্দন, তাই ওনাদের মারা হয়েছে। কিন্তু সেলিমবাবু এটা প্রকাশ্যে বলতে পারবেন না। কারণ তাঁর দলের ‘ইন্ডি’ জোট সঙ্গী হল তৃণমূল। এই সরকার এবং প্রশাসন দাঙ্গাবাজদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হিন্দুদের মরতে দিয়েছে।"
শুভেন্দু লিখেছেন,
"সেলিম সাহেব নিজেও ধর্মকে ভোটের সময়ে 'ক্রাচ' হিসেবে ব্যবহার করেন। কিন্তু জনগণ তিনবার তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছে— ২০১৯-এ রায়গঞ্জ, ২০২১-এ চন্ডীতলা, এবং ২০২৪-এ মুর্শিদাবাদ। তাই তাঁর সৎ সাহস নেই, স্পষ্ট করে বলার যে কেন এবং কাদের হাতে হিন্দু পিতা–পুত্র খুন হলেন।"
সামসেরগঞ্জের ঘটনায় নিহতরা:
হরগোবিন্দ দাস (বাবা)
চন্দন দাস (ছেলে)
হত্যার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে:
- ইউসুয়া সেখ
- একবর সেখ
- হজরত আলি
- কালু নাদার
- নুরুল সেখ
- আনসার আলি
সামসেরগঞ্জের ঘটনা একদিকে যেমন সাম্প্রদায়িক হিংসার নগ্ন রূপ উন্মোচন করেছে, তেমনই এটি প্রমাণ করেছে যে, কোনও দল হিন্দু হত্যার ঘটনাকেও কিভাবে দলীয় প্রচারে ব্যবহার করতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে— "সিপিএম কি এখনও পুরনো তোষণনীতির ধারাই মেনে চলছে?"