স্বয়ং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে ৫ বিঘারও বেশি ওয়াকফ জমি দখলের অভিযোগ ! গোয়েন্দা রিপোর্ট ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি
ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে বিতর্কের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। এই আইন বাতিলের দাবিতে একাধিক জায়গায় বিক্ষোভও দেখা গেছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার একটি বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জমা দেওয়া ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে ওয়াকফ জমি জবরদখলের বিষয়।
কী রয়েছে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে?
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, মহাবীরতলা মসজিদ থেকে আলিপুর পর্যন্ত বিস্তৃত জোহুরা বিবি ওয়াকফ এস্টেটের প্রায় ৩৫ বিঘা জমির মধ্যে ৫ বিঘার বেশি জমি জবরদখল করেছেন ফিরহাদ হাকিম। ওই জমিতে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে যৌথভাবে একটি মার্বেল পাথরের শোরুম চালাচ্ছেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
নাম আরও অনেক তৃণমূল নেতার
শুধু ফিরহাদ নয়, এই রিপোর্টে নাম রয়েছে তৃণমূলের আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতারও। নদিয়ার কালীগঞ্জের প্রয়াত বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ ও তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হক রয়েছেন সেই তালিকায়। নাসিরুদ্দিন সাহিবুল্লা ওয়াকফ এস্টেটের তিন হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট ‘দখল’ করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। নাদিমুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তালবাগান রোডে ওয়াকফের ২২ কাঠা জমি কব্জা করেছেন।
এছাড়া, কলকাতা পুরসভার ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাম্মি জাহান বেগমের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি হাজরা রোডে টিপু সুলতান গোরস্থানে জমি জবরদখল করেছেন।
ফিরহাদের কড়া প্রতিক্রিয়া
এই সব অভিযোগকে পুরোপুরি অস্বীকার করে ফিরহাদ হাকিম এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন,
“এগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন! কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কোনও তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারবে না। এর আগেও আমাকে সিবিআই-ইডি দিয়ে হেনস্থা করার চেষ্টা হয়েছে। এবার আইবিকে নামানো হয়েছে। এদের একমাত্র উদ্দেশ্য অমিত শাহকে খুশি করা।”
শাম্মি জাহান বেগমও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে অস্বীকার করে বলেছেন,
“জবরদখলের প্রশ্নই ওঠে না। কে বা কারা এই রিপোর্ট তৈরি করেছে বুঝতে পারছি না।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক
ওয়াকফ আইন নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্কের আবহে এই রিপোর্ট নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। অন্যদিকে, বিরোধীরা ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ করতে শুরু করেছে।
ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে এই ধরনের অভিযোগ সামনে আসায় বিষয়টি যে রাজনৈতিক তরজায় আরও উত্তপ্ত হবে, তা বলাই বাহুল্য। এখন দেখার, এই প্রতিবেদন ঘিরে কী পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার।