ওয়াকফ বৈঠক: অশান্তির মধ্যেও নেতাজি ইন্ডোরে শান্তির বার্তা, মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ইমামদের দাবি – “শান্তি চাই”
ওয়াকফ সংশোধনী আইন ঘিরে রাজ্যজুড়ে চলা অস্থিরতা ও উত্তেজনার মধ্যেই আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত হল এক মেগা বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে উপস্থিত থেকে রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা করলেন। এই সভার আয়োজন করে ইমাম অ্যাসোসিয়েশন।
বৈঠক ঘিরে সকাল থেকেই নেতাজি ইন্ডোর চত্বরে ভিড় জমতে শুরু করে। সকাল থেকে বহু আমন্ত্রিত প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত হন। গোটা এলাকায় ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। যদিও চারপাশে উত্তেজনার আবহ, কিন্তু আগত প্রতিনিধিদের মুখে বারবার উঠে এসেছে শান্তির কথা।
একজন প্রতিনিধি বললেন, “গোটা বাংলায় আমরা শান্তি চাই। শান্তির বার্তা দিতে চাই। আমরা যেন পুলিশের থেকে সাহায্য পাই, তাঁদেরও যেন সাহায্য করতে পারি।”
হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান - সর্ব ধর্মের মানুষকে পাশে নিয়ে নেতাজী ইন্ডোর থেকে সম্প্রীতির বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।@MamataOfficial#MamataBanerjee #WestBengal #viralvideochallenge pic.twitter.com/iWgXXXm6Qv
— Madan Mitra| মদন মিত্র (@madanmitraoff) April 16, 2025
অপর এক প্রতিনিধি, যিনি রায়গঞ্জ থেকে এসেছেন, জানালেন, “শান্তি চাইছি। আমরা যেন ডাল-ভাত খেয়ে চলতে পারি সেটাই চাই।” আবার অন্য এক প্রতিনিধির দাবি, “গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ওয়াকফ বিল বাতিল হোক, এই দাবি আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানাতে চাই। আমাদের সুরক্ষা দেওয়া হোক। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আমরা একসঙ্গে এই আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যেতে চাই।”
তবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যে অশান্তির ছবি ধরা পড়েছে। মুর্শিদাবাদের সুতি, ধুলিনা ও সামশেরগঞ্জ এলাকায় হিংসাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। চাঁপদানি, আমতলা এবং ভাঙড়েও দেখা গিয়েছে উত্তেজনার ছবি।
এই পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, মুর্শিদাবাদের ঘটনার সময় পুলিশ নীরব দর্শক ছিল। এক বিজেপি নেতা বলেন, “আমাদের কাছে বারবার হিন্দুদের ফোন এসেছে। বলা হয়েছে বিএসএফ পাঠান। সকালে যখন বিএসএফ ঢোকে, ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে শুধুই দেখেছে। আমার মনে হয় এটাই সরকারের পরিকল্পনা।”
সবমিলিয়ে, আজকের নেতাজি ইন্ডোরের এই বৈঠক শুধুই প্রশাসনিক আলোচনা নয়, বরং অশান্ত বাংলার বুকে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন এবং পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়, সেদিকেই এখন নজর গোটা রাজ্যের।