ভারতে আনা হল ২৬/১১ হামলার মূলচক্রী পাকিস্তানি জঙ্গী তাহাউর রানাকে ! উঠল ফাঁসির দাবি
দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান, অবশেষে ভারতের মাটিতে পা রাখল ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম মূল চক্রী তাহাউর রানা।
NIA Formally Arrests 26/11 Mumbai Terror Attack Conspirator Tahawwur Rana on Arrival at IGI, New Delhi pic.twitter.com/CEdO1QwURi
— NIA India (@NIA_India) April 10, 2025
কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বৃহস্পতিবার ভারতের মাটিতে আনা হল পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সন্ত্রাসবাদী তাহাউর রানাকে। ২০০৮ সালের মর্মান্তিক ২৬/১১ মুম্বই হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল এই ব্যক্তি। বহুদিন ধরে ভারতের প্রত্যর্পণের দাবি শেষে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র তাহাউর রানাকে হস্তান্তর করল, আর এনআইএ (NIA) ঘোষণা করল ‘সাফল্যের সঙ্গে’ তার প্রত্যর্পণ সম্পন্ন হয়েছে।
কোথায় রাখা হচ্ছে রানাকে?
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, তাহাউর রানাকে রাজধানী দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্টে তোলা হতে পারে। সেই অনুযায়ী আদালত চত্বর ও তিহাড় জেল জুড়ে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। আধা-সামরিক বাহিনী ও দিল্লি পুলিশ মোতায়েন, জেলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে সুরক্ষিত বিশেষ সেল।
এনআইএ যদিও রানার আগমনের নির্দিষ্ট সময় বা স্থান সম্পর্কে কিছু জানায়নি, তবে তারা বলেছে, এবার তাহাউরকে ভারতীয় গোয়েন্দা ও বিচার ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।
উঠছে ফাঁসির দাবি
২৬/১১ হামলায় স্বজন হারানো পরিবার থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ মানুষ—সবাই এখন একটাই কথা বলছেন: ফাঁসিতে ঝোলানো হোক তাহাউরকে!
হামলায় বেঁচে যাওয়া দেবিকা রোটাওয়ান, যিনি সেই দিন মুম্বইয়ে ছিলেন, বলেছেন,
"তাহাউরের জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসতে পারে পাকিস্তানের মদতে চলা সন্ত্রাসের আসল রূপরেখা। তাকে জেরা করে আরও অনেক গোপন তথ্য জানা যেতে পারে। তারপর উচিত শাস্তি—ফাঁসি!"
একই সুরে কথা বলেছেন মুম্বই পুলিশের প্রাক্তন অফিসার হেমন্ত বাওধনখড়। তাঁর বক্তব্য,
"তাহাউরকে ফিরিয়ে আনা NIA-এর বিশাল সাফল্য। তার শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে গোটা বিশ্ব একটা স্পষ্ট বার্তা পায়—সন্ত্রাসবাদকে ভারত বরদাস্ত করে না।"
কেন এত গুরুত্বপূর্ণ তাহাউরের প্রত্যর্পণ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশে থাকা ২৬/১১ হামলার অভিযুক্ত কোনও জঙ্গিকে প্রথমবার ভারতের মাটিতে আনা হয়েছে। এটি শুধু NIA-এর নয়, ভারতের কূটনৈতিক ও আইনি জয়ের প্রতীক। তাহাউরের জবানবন্দিতে উঠে আসতে পারে পাকিস্তান সরকারের প্রত্যক্ষ মদতের প্রমাণ—যা আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে আরও চাপে ফেলতে পারে।
তাহাউরের ভূমিকা কী ছিল?
ডেভিড হেডলির ভারতে প্রবেশে সাহায্য করেছিল সে, ভিসা পাইয়ে দিয়েছিল।
২৩১ বার যোগাযোগ করেছিল হেডলির সঙ্গে ভারতে আসার আগে।
পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর হ্যান্ডলার মেজর ইকবাল-এর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
তাহাউর রানার প্রত্যর্পণ ২৬/১১ মামলায় ভারতের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটাল। এখন দেশবাসীর চোখ তাহাউরের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ ও ন্যায়বিচারের দিকে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের এই কঠোর অবস্থান আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বার্তা দিচ্ছে—ভারত চুপচাপ সহ্য করবে না।