হিংসার পেছনে সংখ্যালঘু ভোট টানার রাজনীতি! মমতাকে তোপ দাগলেন শুভেন্দু অধিকারী
কলকাতা: Manusher Bhasha
Image credit - Deccan Herald
মুর্শিদাবাদে সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনার নেপথ্যে শাসকদলের ‘সংখ্যালঘু ভোট টানার চক্রান্ত’ রয়েছে বলে তীব্র অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ বিধানসভার বাইরে বিজেপির ‘হিন্দু শহিদ দিবস’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, “গত লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোট কংগ্রেসের দিকে গিয়েছিল। সেই ভোট নিজেদের দিকে টানতেই তৃণমূল মুর্শিদাবাদে অশান্তি ছড়ানোর চক্রান্ত করেছে।” তাঁর দাবি, ফরাক্কা, সামশেরগঞ্জ ও ধুলিয়ান এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব এই ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এবং তাদের বিরুদ্ধে ভিডিও প্রমাণও রয়েছে।
আজ বিজেপির বিধায়করা সাদা-কালো পোশাকে, হাতে কালো পতাকা নিয়ে বিধানসভা চত্বরে জমায়েত করেন। নির্মাণ করা হয় একটি অস্থায়ী ‘শহিদ বেদি’। সেখানে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে নিহত হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানান শুভেন্দু ও অন্যান্য বিধায়করা। তাঁরাই সেই বাবা-ছেলে, যাদের বাড়ি থেকে টেনে বের করে নির্মমভাবে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
মমতাকে কড়া আক্রমণ
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, “খুনি তৃণমূল নেতাদের মদতেই এই গণহত্যা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যা বলছেন, তথ্য আড়াল করছেন। এ রাজ্যে হিন্দুদের প্রাণের কোনও মূল্য নেই!” তিনি দাবি করেন, “এনআইএ তদন্ত হলে সমস্ত সত্য সামনে আসবে।”
মেরুকরণের রাজনীতি ও স্লোগানের ঝড়
আজ বিজেপি নেতাদের মুখে শোনা যায় জোরালো স্লোগান—
‘বাংলার হিন্দু এক হও’, ‘চোর মমতা হায় হায়’, ‘খুনিদের মুখ্যমন্ত্রী হায় হায়’, ‘পুলিশ মন্ত্রী হায় হায়’!
এই প্রতিবাদে স্পষ্ট, মেরুকরণের রাজনীতিকে সামনে রেখেই বিজেপি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাইছে।
পাল্টা জবাবে মমতা দুষলেন সেই বিএসএফকে
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে কেন্দ্রকে নিশানা করে বলেন, “বাংলাদেশের হাত থাকলে তা দেখার দায়িত্ব বিএসএফের, রাজ্যের নয়।” তাঁর অভিযোগ, বিজেপি সমর্থিত দুষ্কৃতীরাই পরিকল্পিতভাবে এই হিংসা ছড়াচ্ছে এবং তার দায় তৃণমূলের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, “বিএসএফ টাকা দিয়ে ছোট ছোট ছেলেদের দিয়ে পাথর ছোড়াচ্ছে। যারা সীমান্ত পাহারা দেয়, তারাই কি হিংসা রুখতে ব্যর্থ?”
পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত
মুর্শিদাবাদে হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে— দুই হিন্দু এবং এক সংখ্যালঘু কিশোর। গত ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত শতাধিক গ্রেফতার, এলাকায় চলছে বিএসএফ টহল, এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন।
👉 সম্পূর্ণ আপডেট, মতামত ও বিশ্লেষণ পেতে চোখ রাখুন "Manusher Bhasha"-তে।