জল না বইলে , রক্তই বইবে " পাকিস্তানের হুমকি ; গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেব : মোদী - যুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে ভারত
পাকিস্তানি কূটনীতিকের হুমকিতে উদ্বেল আন্তর্জাতিক মহল
শুধু শাস্তি নয়, বরং যারা এদেশের আত্মা আঘাত করেছে, তাদের অস্তিত্বই মুছে ফেলা হবে— হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
মনুষের ভাষা
নয়াদিল্লি | ২৪ এপ্রিল ২০২৫
“যদি জল না বয়ে যায়, তবে রক্তই বইবে।”—পাক কূটনীতিক আব্দুল বাসিতের এই হুমকি যেন ফের একবার তুলে ধরল উপমহাদেশে যুদ্ধের ছায়া।
মঙ্গলবার কাশ্মীরের পাহেলগামে পাকিস্তানপন্থী জঙ্গিদের নৃশংস হামলায় ধর্ম জিজ্ঞেস করে পর্যটকদের উপর গুলি চালানো হয়। এই ঘটনায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের প্রাণহানি হয়। তার পর থেকেই ভারত কঠোর প্রতিক্রিয়া নিতে শুরু করে।
জল vs রক্ত?
সিঁধু জল চুক্তি স্থগিত করে পাকিস্তানের গলা টিপে ধরেছে ভারত। এর ফলে পাকিস্তানের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উপর খাদ্য ও জলের সঙ্কট নেমে আসার সম্ভাবনা প্রবল। ভারত সরকারের এই পদক্ষেপে উত্তাল ইসলামাবাদ। পাল্টা পদক্ষেপে পাকিস্তান তাদের এয়ারস্পেস ও ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করেছে এবং শিমলা চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। কিন্তু এতেও যেন মেটেনি তাদের হাহাকার।
পাকিস্তানের আশ্রয় এখন চিন
ভারতে নিযুক্ত প্রাক্তন পাক হাইকমিশনার আব্দুল বাসিত বলেন, “ভারত একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। জল আটকানোর পরিকাঠামোও ভারতের নেই।” শুধু তাই নয়, তিনি বলেন—“ভারত যদি পাকিস্তানের জল আটকায়, তাহলে চিনও ভারতের জল আটকে দিতে পারে। কারণ ভারতের বহু নদী চিন থেকে প্রবাহিত।”
বাসিত এই যুক্তিতে চিনকে ভারতবিরোধী এক কৌশলগত অস্ত্র হিসাবে তুলে ধরেন। কিন্তু বাস্তব বলছে, চিন পাকিস্তানের কথামতো ব্রহ্মপুত্র বা অন্য কোনো নদীর জল আটকে দেবে—এমনটা সম্ভাবনার অতীত।
“পানি না বয়ে গেলে রক্ত বইবে”
‘ডন’ সংবাদপত্রের একটি আলোচনায় বাসিত বলেন, “যদি অস্তিত্বের প্রশ্ন ওঠে, যদি টিকে থাকার লড়াই হয়—আর যদি জল না বয়, তবে রক্তই বইবে।” এই কথার মাধ্যমে তিনি কার্যত ভারতকে যুদ্ধের হুমকি দেন, শুধু সিঁধু নদীর জল পাওয়ার জন্য। কথার শরীর যতই রণচণ্ডী হোক না কেন, আসলে এটি এক খণ্ডিত, আতঙ্কগ্রস্ত রাষ্ট্রের হতাশার চিহ্ন।
ভারতের জলযুদ্ধ: কৌশলগত সাড়া
ভারতের জলের উপর অধিকারকে অস্ত্র করে ইতিমধ্যেই একাধিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মিত হয়েছে বা নির্মাণাধীন:
বাঘলিহার বাঁধ – রামবন, চেনাব নদী
রাতলে প্রজেক্ট – নির্মাণাধীন, ৮৫০ মেগাওয়াট, চেনাব নদী
সালাল বাঁধ – সম্পূর্ণ, চেনাব নদী
উড়ি বাঁধ – ১৯৯৭ সাল থেকে চালু, চেনাব
কিশনগঙ্গা বাঁধ – ঝিলম নদীতে
নিমু বাজগো বাঁধ – লাদাখ, সিঁধু নদীতে
শাহপুর কান্ডি বাঁধ – পাঞ্জাব, রাভি নদীতে
এই বাঁধগুলো পাকিস্তানের জলনির্ভরতাকে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে। বাসিত যেভাবে বলছেন—ভারতের পরিকাঠামো নেই—তা আদতে পাকিস্তানি জনগণকে গুমরাহ করার অপচেষ্টা।
কূটনৈতিক তৎপরতা , সামরিক প্রস্তুতি
ভারতের পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে আমেরিকা সহ বহু দেশের রাষ্ট্রদূতকে বৈঠকে ডেকেছে ভারত। সামরিক বাহিনীকেও চূড়ান্ত প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান যে মিসাইল টেস্টের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তার আগেই ভারত তার ধ্বংসকারী সক্ষমতা প্রকাশ করেছে।
শত্রুকে "মাটিতে মিশিয়ে দেব , অস্তিত্বই আর থাকবে না " পাহেলগাঁও হামলা ভারতের আত্মায় আঘাত : কল্পনাতীত শাস্তির হুশিয়ারী প্রধানমন্ত্রী মোদীর ।
National Panchayati Raj Day programme in Madhubani, Bihar. https://t.co/cM06fBSkvY
— Narendra Modi (@narendramodi) April 24, 2025
তিনি বলেন প্রতিশোধ নেওয়া হবে এবং তার জন্য প্রয়োজনে তাদের পৃথিবীর শেষ প্রান্ত থেকে খুঁজে আনা হবে।
পাকিস্তানের হুমকি - যুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে ভারত ; গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেব : মোদী
পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি? বিহারের মাটিতে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে বার্তা দিতে ইংরেজিতে বললেন মোদী, বললেন— "মাটি মিশিয়ে দেব"
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহের মৃত্যুতে গোটা দেশ শোকাহত। এর মধ্যেই বিহারে এক জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়ে দিলেন, এ দেশের আত্মায় আঘাত হানা হলে তার ফল ভয়ানক হবে।
তিনি ইংরেজিতে বিশ্বের মানুষকে বলেন,
"আজ বিহারের পবিত্র মাটি থেকে আমি সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিচ্ছি— ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র যারা করেছে, যারা এই হামলার পরিকল্পনায় জড়িত, তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হবে যা কল্পনারও বাইরে। শেষ কোণেও লুকিয়ে থাকলেও তাদের খুঁজে বের করে ধ্বংস করা হবে। ভারতের মনোবল ভাঙা যায় না। সন্ত্রাসবাদের কোনো ক্ষমা নেই।"
The Economic Times
এর পরে তিনি হিন্দিতে বলেন—
মিট্টিমে মিলা দেঙ্গে -"মাটিতে মিশিয়ে দেব।"
শুধু শাস্তি নয়, বরং যারা এদেশের আত্মা আঘাত করেছে, তাদের অস্তিত্বই মুছে ফেলা হবে— এই হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিদেশের রাষ্ট্রনেতারাও ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু মোদীর স্পষ্ট বার্তা— "মানবতা যারা মানে, তারা ভারতের পাশে থাকবেই। তবে যারা ভারতের সঙ্গে শত্রুতা করে, তাদের এখন সময় এসেছে বুঝে নেওয়ার— এ দেশ আর সহ্য করবে না।"
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জল নিয়ে যুদ্ধের হুমকি যতই আসুক না কেন, বাস্তব বলছে—এই সঙ্কট কূটনৈতিক কৌশল এবং পরিকাঠামোগত শক্তির মাধ্যমে ভারতই সামাল দেবে। রক্তের নয়, জলের লড়াইয়ে এখন ভারতের হাতে ট্রাম্প কার্ড। প্রশ্ন শুধু একটাই—এই হুমকির জবাব কি শুধু কূটনীতিতে সীমাবদ্ধ থাকবে, না কি আরও কিছু বড় সিদ্ধান্ত আসন্ন?