ঘরছাড়ারা তো বাংলাতেই আছে : যুক্তি ফিরহাদের , রাষ্ট্রপতি শাসন দাবি শুভেন্দুর
ওয়াকফ আইন সংশোধন ২০২৫ নিয়ে অশান্ত মুর্শিদাবাদ, হিন্দু পরিবারের নিরাপত্তাহীনতা ঘিরে উত্তাল রাজনীতি
মুর্শিদাবাদ জেলায় ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫ নিয়ে চলা সহিংসতা ক্রমশই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ঘরছাড়া হয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে পরিবার। আতঙ্কে মালদার পারলালপুর হাইস্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন বহু অসহায় মানুষ। তাদের চোখেমুখে ফুটে উঠছে আতঙ্ক ও অসহায়তার ছবি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে ফিরহাদ হাকিমের ‘আজব সাফাই’ নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বিজেপি।
শুভেন্দুর তোপ: রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, "মুর্শিদাবাদে আইনশৃঙ্খলা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে।" সুতি, ধুলিয়ান, জঙ্গিপুর, ও সামশেরগঞ্জে সরকার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছে, বরং শাসক দলের মতো আচরণ করছে বলে সরাসরি অভিযোগ তাঁর।
তিনি আরও বলেন, "যেখানেই হিন্দুরা সংখ্যালঘু, তাদের ভোটাধিকার কার্যত কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তাণ্ডব চলছে, প্রশাসন চুপ। এই অবস্থায় রাজ্যে ২০২৬-এ রাষ্ট্রপতি শাসনের অধীনে নির্বাচন হওয়া উচিত।"
ফিরহাদের ব্যাখ্যা: 'বাংলার মধ্যেই তো আছে'
ঘরছাড়াদের উদ্বেগ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্য ঘিরেও চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, "বাংলার মানুষ বাংলার মধ্যেই থাকছে, তারা রাজ্য ছেড়ে পালাচ্ছে না।" এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা বলছেন, "মানুষ যে নিজের জেলাতেই নিরাপদ নয়, তা প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন কী করছে?"
বিজেপির পথে নামার হুঁশিয়ারি
ঘরছাড়া মানুষের সঙ্গে দেখা করে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "যাঁদের বাড়িঘর জ্বালানো হয়েছে, ভেঙে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। বিজেপি কর্মীরা প্রতিটি জেলায় রাস্তায় নামবে। গণতান্ত্রিক পথে যেমন আন্দোলন চলবে, তেমন আইনি লড়াইও হবে।"
SIT তদন্তের দাবি সুপ্রিম কোর্টে
ওয়াকফ আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে চলা সহিংসতার ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে একটি আবেদন। আবেদনকারীরা চাইছেন, আদালতের তত্ত্বাবধানে SIT গঠন করে নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।
হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন, ঘরছাড়া বহু হিন্দু পরিবার
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মুর্শিদাবাদে সহিংসতায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, বহু আহত। আতঙ্কে বহু পরিবার ঘর ছেড়ে পালিয়ে আসছে মালদার বিভিন্ন অঞ্চলে। এক কাপড়ে পালিয়ে আসা মানুষদের ঠাঁই হয়েছে আশ্রয় শিবিরে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে হোমগার্ড মোতায়েন করা হলেও পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক।