ওয়াকফ আইন নিয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, পশ্চিমবঙ্গে হিংসার আবহে জানালেন আইনের প্রেক্ষাপট
নিজস্ব সংবাদদাতা | তারিখ: ১৪ এপ্রিল ২০২৫ | স্থান: চণ্ডীগড়
মুর্শিদাবাদ সহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ও হিংসার ঘটনার আবহে, এবার এই বিতর্কিত ইস্যুতে সরাসরি মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হরিয়ানার হিসারে বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ওয়াকফ আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করা, কোনও বিশেষ গোষ্ঠীকে নয়।
#WATCH | Hisar, Haryana | PM Modi says, "There are lakhs of hectares of land in the name of Waqf. If benefits from Waqf properties had been given to the needy, it would have benefitted them. But on land mafia benefitted from these properties ...The loot of the poor will stop with… pic.twitter.com/U61bZN6u8P
— ANI (@ANI) April 14, 2025
জমি দখল নিয়ে উদ্বেগ
প্রধানমন্ত্রী জানান, “ওয়াকফের নামে লাখ লাখ হেক্টর জমি রয়েছে। কিন্তু এই জমির বেশিরভাগটাই জমি মাফিয়াদের কবলে পড়ে রয়েছে। তারা নিজেদের স্বার্থে এই জমিগুলি ব্যবহার করছে। অথচ এই সম্পত্তি থেকে উপকৃত হওয়া উচিত সাধারণ মানুষ, দরিদ্র ও প্রান্তিক শ্রেণির মানুষদের। সেই লক্ষ্যেই ওয়াকফ আইন আনা হয়েছে।”
তিনি এও বলেন, “এই আইন জমি দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করবে। আমাদের সরকার জনগণের সম্পত্তি জনগণের কাছেই রাখতে চায়।”
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। তাঁর অভিযোগ, “কংগ্রেস বারবার সংবিধানের অপব্যবহার করেছে। বাবাসাহেব আম্বেদকরের তৈরি করা সংবিধানকে তারা ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে ব্যবহার করেছে।”
তিনি বলেন, “কংগ্রেস এমন পদক্ষেপ নিয়েছে যা আম্বেদকরের আদর্শের পরিপন্থী। আম্বেদকর সাম্য ও সমানাধিকারের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস দেশে বিভাজনের রাজনীতি চালিয়েছে, বিশেষ করে এসসি, এসটি ও ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখার চেষ্টা করেছে।”
“ওয়াকফ আইন জাতীয় স্বার্থের প্রতিফলন”
প্রধানমন্ত্রী জানান, ওয়াকফ আইন কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। বরং এটি ভোটব্যাঙ্ক নয়, উন্নয়নমুখী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। তাঁর মতে, “জাতীয় সম্পত্তি জাতির কল্যাণে ব্যবহৃত হোক – এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই জন্যই এই আইনটি প্রয়োজনীয়।”
মুর্শিদাবাদে হিংসার নেপথ্যে কে?
প্রসঙ্গত, ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মুর্শিদাবাদে গত কয়েকদিনে একাধিক বিক্ষোভ ও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে, কিছু জায়গায় রাস্তাও অবরোধ করা হয়েছে। এর ফলে প্রশাসনিক অচলাবস্থাও দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই বক্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, মোদীর এই বক্তব্য ওয়াকফ আইন ঘিরে চলা বিতর্কে বিজেপির অবস্থান স্পষ্ট করল এবং সেইসঙ্গে কংগ্রেসকে রাজনৈতিক চাপে ফেলতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার।