যেকোনো মুহূর্তে যুদ্ধ শুরু ! ভয়ঙ্কর আক্রমণ আসন্ন স্বীকার করে নিলো পাকিস্তান-
এক্সক্লুসিভ: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বললেন, ভারতের সামরিক অভিযান আসন্ন
রিপোর্ট: রয়টার্স , মানুষের ভাষা , ওয়েব ডেস্ক :
ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতি ও পাকিস্তানের আতঙ্ক
এই পরিস্থিতিতে ভারতের পক্ষ থেকে সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের মধ্যে একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকগুলিতে সীমান্ত পরিস্থিতি, কৌশলগত পদক্ষেপ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ সোমবার জানিয়েছেন, কাশ্মীরে সম্প্রতি পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর প্রতিবেশী ভারতের সামরিক অভিযান এখন আসন্ন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
গত সপ্তাহে দক্ষিণ কাশ্মীরের পাহেলগাম এলাকায় পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান ওঠে। ভারত পাকিস্তানকে দীর্ঘদিন ধরে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগ করে আসছে, যদিও পাকিস্তান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ রয়টার্সকে ইসলামাবাদে তার অফিসে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন,
"আমরা আমাদের সেনাবাহিনীকে আরও মজবুত করেছি, কারণ এটা এখন প্রায় নিশ্চিত যে অভিযান আসন্ন। এ ধরনের পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হয়, এবং আমরা সেই সিদ্ধান্তগুলি ইতিমধ্যে নিয়েছি।"
তিনি জানান, ভারতের যুদ্ধংদেহী বক্তব্য বাড়ছে এবং পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সরকারকে একটি সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছে। তবে কোন নির্দিষ্ট তথ্য বা প্রমাণ তিনি প্রকাশ করেননি।
ভারতের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে রয়টার্সের অনুরোধের পরও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
কাশ্মীরের হামলার পর ভারত দাবি করে, নিহত দুই হামলাকারী পাকিস্তানি নাগরিক। যদিও ইসলামাবাদ তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
পাকিস্তান বর্তমানে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। আসিফ জানান, পাকিস্তান কেবলমাত্র তাদের অস্তিত্বের সরাসরি হুমকির মুখে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে।
আসিফ আরও বলেন, পাকিস্তান ইতিমধ্যেই বন্ধুত্বপূর্ণ কিছু রাষ্ট্র যেমন উপসাগরীয় দেশ ও চীনকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছে এবং ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শক্তিগুলোকেও জানিয়েছে।
তিনি জানান,"আমাদের আরব উপসাগরীয় কয়েকজন বন্ধু দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছেন।"
তবে দেশগুলির নাম প্রকাশ করেননি।
চীন সোমবার উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং উত্তেজনা প্রশমনে সব ধরনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। আসিফ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ থেকে বিরত রয়েছে।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ভারত ও পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে সম্পর্কের সমাধান করবে। তবে পরবর্তীতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, তারা দুই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে এবং 'দায়িত্বশীল সমাধানের' পক্ষে আহ্বান জানিয়েছে।
কাশ্মীর হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারত ইন্দাস জলচুক্তি (Indus Waters Treaty) স্থগিত করেছে, যা দুই দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী-বণ্টন চুক্তি। অপরদিকে পাকিস্তান তার আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ করেছে।
আসিফ বলেন, জল সরবরাহ বন্ধ করা 'যুদ্ধের কাজ'।
তার ভাষায়,"আমরা ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহল এবং বিশ্বব্যাংকের কাছে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি।"