"ডান্ডার রাজনীতি চাই?" বাংলায় যোগীর আগমন চায় শুভেন্দু, মমতাকে কাঠগড়ায় তুললেন রিজিজু!"
প্রবীর রায় চৌধুরী , Manusher Bhasha প্রতিবেদন | স্পেশাল রিপোর্ট |
কলকাতা-লখনউ-মুর্শিদাবাদ
মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে। যোগী আদিত্যনাথ, কিরেন রিজিজু থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী — একের পর এক বিজেপি নেতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ‘উস্কানিমূলক ভাষণ’ ঘিরে উত্তাল হচ্ছে দিল্লি থেকে বাংলার মাটিও।
শুভেন্দুর যুদ্ধঘোষণা: "ভাষা নয়, দরকার ডান্ডা!"
আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি বিধানসভা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্ট ভাষায় বলেন:
“মুর্শিদাবাদের ইস্যু এখন শুধু বাংলার নয়, গোটা দেশের ইস্যু হয়ে উঠেছে। যোগীজি প্রতিটি সভায় বাংলার হিন্দুদের উপর হওয়া অত্যাচার এবং মুর্শিদাবাদের অবস্থা নিয়ে বলছেন। তিনি কালও বলেছেন— এসবের জবাব ভাষায় নয়, ডান্ডায় দিতে হবে।”
CM Yogi's Statement on Bengal Violence
— जय कृष्णा / Jay Krishna (@Jaykrishnalive) April 15, 2025
"Those who understand only force won't listen to words; rioters will only be controlled with sticks. If someone prefers Bangladesh, they should go to Bangladesh. Congress and Samajwadi Party are silent on the Bengal violence." – CM Yogi pic.twitter.com/AcW8kBVk5d
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আরও বক্তব্য: অবিলম্বে বাংলায় আসুন
“আমি যোগীজিকে অনুরোধ করব, অবিলম্বে বাংলায় আসুন। হিন্দুদের রক্ষা করার জন্য তাঁর মতো শক্তিশালী মুখ দরকার বাংলায়। উনি যেভাবে উত্তরপ্রদেশে দাঙ্গাবাজদের শায়েস্তা করেছেন, বাংলার হিন্দুরাও সেটা শুনে সাহস পাবে।”
Suvendu Adhikari roars in Bengal. Asks Yogi to step in. Protect Hindus. Stop the terror. Warns of 2026.
— The Analyzer (News Updates🗞️) (@Indian_Analyzer) April 16, 2025
~ Says Hindus will unite. Will take revenge. Rioters will face Yogi’s way. No mercy🔥 pic.twitter.com/ffLWwURE9I
ওয়াকফ আইন ঘিরে বাংলা জ্বলছে বিতর্ক
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, তিনি রাজ্যে ওয়াকফ আইন কার্যকর হতে দেবেন না। এই বক্তব্য নিয়েই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু।
রিজিজুর প্রশ্ন:
এদিকে, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এক সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন —
“একজন মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে সংসদে পাশ হওয়া আইন আটকে রাখার কথা বলেন? এটা কোনও পছন্দের বিষয় নয়। এটা সংবিধানের লঙ্ঘন।”
তিনি আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই হিংসাকে উস্কে দিয়েছেন। আইন স্বীকার না করে জনগণকে প্রতিবাদের পথে ঠেলে দিয়েছেন।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদের সহিংসতার পিছনে বাংলাদেশের কিছু দুষ্কৃতী ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের যোগ রয়েছে। সেই দুষ্কৃতীদের মদত দেওয়া হলেও পরে তাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে স্থানীয় নেতৃত্ব।
যোগীর বার্তা: ‘‘লাঠি না হলে ...,"‘লাথো কি ভূত বাতো সে ক্যায়সে মানেঙ্গে!’”
আজ হরদৌই-র এক সভায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কড়া ভাষায় বলেন:
“পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা চলছে। মুর্শিদাবাদ জ্বলছে দিনের পর দিন। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা নীরব দর্শক হয়ে বসে আছেন। দুষ্কৃতীদের শান্তি ফেরানোর দায়িত্ব দিয়ে বসে রয়েছেন। এটা ধর্মনিরপেক্ষতা নয়, এটা হিংসার রাজনীতি।”
সূত্রের খবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে জমা পড়া রিপোর্ট অনুযায়ী, মুর্শিদাবাদের ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দুষ্কৃতীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন, সীমান্ত পেরিয়ে কারা এসেছে, আর তাদেরকে কারা ‘অতিথি’ করে এনেছে।
বিরোধী কণ্ঠস্বর:
তৃণমূলের সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন—
“ধর্মনিরপেক্ষ দেশে নির্বাচিত এক মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আর এক মুখ্যমন্ত্রীর এই ভাষা অসাংবিধানিক। যোগী নিজের রাজ্যের দিকে তাকান আগে— জাতীয় অপরাধ পরিসংখ্যানে বাংলা অনেক ভাল জায়গায়।”
CPM নেতা মোহাম্মদ সেলিম তোপ দেগে বলেন—
“যোগীর এই ভাষণ একেবারে ঘৃণা-ভাষণ। তাঁর রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি দলিত নির্যাতন হয়। বিজেপি ও তৃণমূল উভয়েই ঘৃণার রাজনীতি করছে। যদি সাহস থাকে, মমতা সরকার যেন যোগীর বিরুদ্ধে FIR দায়ের করে!”
‘হিন্দুর রক্ষক’ হয়ে যোগী বাংলায় ঢুকবেন কি? শুভেন্দুর ডাক কি বিজেপির পূর্বাঞ্চলীয় রণনীতি? আর মমতা কি সত্যিই সংসদীয় আইন রুখে দিতে পারবেন? বাংলার রাজনীতি এই মুহূর্তে ভয়ঙ্কর এক ‘তাপমাত্রা’র দিকে এগোচ্ছে।
📝 প্রকাশনায়: Manusher Bhasha
📸 ছবি ও ইনপুট: কলকাতা, লখনউ, মুর্শিদাবাদ