ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ ঘিরে ট্রেন অবরোধ, ভাঙচুর , তাণ্ডব : মুর্শিদাবাদ থেকে আমতলা উত্তপ্ত, শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিবাদ
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন বাতিলের দাবিতে হওয়া প্রতিবাদ বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংসতায় রূপ নেয়। রাজ্যের মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুর মহকুমার সুতি ও সামশেরগঞ্জ ব্লক, দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলা, এমনকি কলকাতার বিভিন্ন এলাকাও এই উত্তেজনার শিকার হয়।
পুলিশও আক্রান্ত
মুর্শিদাবাদে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের মুখোমুখি সংঘর্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে ফরাক্কার এসডিপিও মনিরুল ইসলাম খান আহত হন। সরকারি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়, বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে, এমনকি নিমতিতা স্টেশনে ভাঙচুরও চালানো হয়। অন্যদিকে, আমতলায় প্রার্থনার পরে শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ ক্রমেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়, যেখানে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয় ও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।
পুলিশও আক্রান্ত
এই সমস্ত ঘটনার পটভূমিতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দল বিজেপির নেতা ও নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি শুধু ভাষণে থেমে থাকেননি, বরং সরাসরি মুর্শিদাবাদের সাম্প্রতিক আরেকটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা কবলিত অঞ্চল, মালদার মথাবাড়ি সফর করেন। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তিনি সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করেন, তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন ও আর্থিক সাহায্য প্রদান করেন।
রাজ্যে পুলিশ নিষ্ক্রিয় : শুভেন্দু অধিকারী
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "মথাবাড়িতে হিন্দুদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা সংঘটিত হয়েছে। তাদের বাড়িঘর ও দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা এখানে এসেছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। রাজ্যে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে, কলকাতা হাইকোর্ট নিশ্চয়ই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।"
বিভাজনের রাজনীতি করছে তৃণমূল : শুভেন্দু
তিনি অভিযোগ করেন, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চাইছে। মথাবাড়ির জনসংখ্যা গঠনে মুসলিমদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এই ধরনের উত্তেজনা ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো হচ্ছে বলে তাঁর দাবি। তিনি বলেন, "লোকসভা নির্বাচনে এখান থেকে তৃণমূল ৪৮,০০০ ভোটে পিছিয়ে ছিল। তাই তারা এখন বিভাজনের রাজনীতি করছে।"
তিনি নিজে সমাজ মাধ্যমে জানান - "মহামান্য আদালতের নির্দেশ মেনে আজ মালদার মোথাবাড়িতে চৌরঙ্গী, পাল পাড়া, হালদার পাড়া সহ অন্যান্য এলাকা পরিদর্শন করলাম। জেহাদিদের হাতে আক্রান্ত হিন্দু পরিবারগুলির সাথে সাক্ষাৎ করে প্রত্যেকের সাথে কথা বললাম। মোথাবাড়ি তে ভয়ঙ্কর অত্যাচার হয়েছে, প্রায় ৮৬ টি পরিবার আক্রান্ত হয়েছে, মা বোনেরা আক্রান্ত হয়েছেন, কারোও হাত ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে, কারোও পা, দোকান, বাড়ি লুটপাট করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের হাতে কিছু আর্থিক সাহায্য তুলে দিয়ে সর্বোতভাবে সকলের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছি।"
শুভেন্দু অধিকারীর এই কার্যকরী পদক্ষেপ
যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ, ১৪৪ ধারা জারি, পুলিশি টহল এবং সহিংসতা থামানোর চেষ্টা চলছে, সেখানে শুভেন্দু অধিকারীর এই কার্যকরী পদক্ষেপ ও মাটির মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে। তিনি পরিস্থিতিকে কেবল রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার না করে, সরাসরি এলাকা পরিদর্শন, ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সংযোগ এবং আইনি সহায়তা দেওয়ার কাজ করছেন—যা তাঁকে অন্যান্য নেতাদের থেকে আলাদা করে তুলছে।