ব্যাট-বল নয় - আজ স্নায়ু-আর কৌশলের মহারণ। ১৪০ কোটি বনাম ১১ | India Vs Australia - Worl Cup Final 2023
Manusher Bhasha: - প্রবীর রায় চৌধুরী -
কোনো খেলাতেই ফাইনালের কোনো ভবিষ্যৎ বাণী হয় না। আজকের ভারত -অস্ট্রেলিয়া ফাইনালও তার ব্যতিক্রম নয়। আজ তো ২২ জন প্লেয়ার মাঠে খেলবেন মাত্র। কিন্তু সেটা ভাবা খুব ভুল হবে। তার সঙ্গে ১৪০ কোটি ভারতবাসীও পারলে মাঠে নেমে পড়েন। যে যার নিজের নিজের জায়গায় বসে খেলে দেখবেন ঠিকই, কিন্তু সেটাই তার তার কাছে খেলার মাঠ।প্রতিটি ভারতবাসী নিজেই এক এক জন খেলোয়াড় , নিজেই ক্যাপ্টেন , নিজেই কোচ। অসীম প্রত্যাশা। প্রতিটি বলে উত্তেজনা। রোহিত শর্মার নেওয়া প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে কাটা ছেঁড়া - এসব নিয়েই আজকের ম্যাচ।বলা ভালো মহারণ। কাজেই এই পাহাড় প্রমাণ চাপ সামলে নিজেদের নার্ভ ধরে রাখাই আজকের ভারতীয় দলের কাছে আসল চ্যালেঞ্জ।
বিশ্বকাপের অতীত পরিসংখ্যান নিয়ে গুগল করলেই অসংখ্য তথ্য পেয়ে যাবেন। জ্যোতিষী থেকে রাজনীতিবিদ প্রত্যেকেই তাদের মতামত দিয়ে রেখেছেন।আশা নিরাশার দোলাচল নিয়ে টেনশনে ফুটছে আপামর ভারতীয়। মাঠ , আবহাওয়া , টিম ,কম্বিনেশন , এমনকি পয়া -অপয়া আম্পয়ার বেচারাও বাদ পড়েন নি।
কিন্তু দেখা গিয়েছে এই ধরনের ম্যাচে প্রায় কোনো আগাম কথাই মেলে না। এখানে নতুন ইতিহাস তৈরী হয় , জন্ম হয় নতুন নায়কের। লেখা হয় কোনো ট্রাজিক হিরোর বীরোচিত লড়াইয়ের মহাকাব্য।
ব্যাট-বলের এই মহা সংগ্রাম আরও উত্তেজনার তার কারণ , "ক্রিকেট ইজ এ গেম অফ গ্রেট আনসার্টেনিটি " - এই খেলার মহান অনিশ্চয়তাই এই লড়াইকে আরও মহান করে তোলে। তাই ক্রিকেটকে অনেকে বলেন এক বলের খেলা।
কপিল-ধোনি পেরেছেন , এই মহা-খেল-যুদ্ধের নায়ক হতে। রোহিত কি পারবেন? - এই প্রশ্নটাই ভুল। কারণ টিমের প্রতিটি প্লেয়ারের প্রতিটি নড়াচড়া , প্রতিটি ঠিক ও প্রতিটি ভুল এর যোগ ফলই ম্যাচের রেজাল্ট তৈরী করে। একক দক্ষতা অনেক সময়েই দুদলের পার্থক্য তৈরী করে দেয়। আর ফারাক গড়ে দেয় ধুরন্ধর মস্তিষ্কের নেওয়া কিছু সূক্ষ কৌশল , প্রতিপক্ষকে অবাক করে দেওয়ার , ঘাবড়ে দেওয়ার মত আস্তিনে রাখা কিছু গোপন টেক্কা। যা হঠাৎ মাছের রং বদলে দেয়। ম্যাচের গতি মুহূর্তে উল্টো দিকে ঘুরে যায়।
তাই আজকের খেলা যত না , ব্যাটে-বলে , তার চেয়েও বেশি মস্তিষ্কের কাঠিন্যের , কৌশল রচনার , নার্ভ ধরে রাখার ক্ষমতার , একজোট হয়ে লড়ার। একটাই আসার কথা - এ সব কোটাতেই টিম-রোহিত কিছুটা এগিয়ে - তার প্রমান রোহিত এবং তার টিম গ্রূপ লীগ থেকেই রেখেছে। আর বলা হয় কিছু কিছু মানুষের সহজাত নেতৃত্বের ক্ষমতা থাকে - ধোনি আর রোহিত অনেকটা সেরকম। আইপিএল এর ইতিহাস তো তার সাক্ষি। সিরাজের বদলে অশ্বীন - ব্যাপারটা আপাত দৃষ্টিতে খারাপ বলে মনে হয় না। সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার নিরামিষ স্পীন নিয়ে যারা প্রায় লাজে গোবরে অবস্থা - তাদের দুর্বল জায়গায় ভারত আঘাত হানবে এ তো খুব স্বাভাবিক। আর পিচ ? তোমাদের দেশে ভারত গেলে সবুজ ঘাস ছড়িয়ে উঁচুবলের ঠোকা ঠুকি দিয়ে আমাদের সাথে কেমন মজা তোমরা দেখ বলতো বাপু ? গত ২০০৩ এর ফাইনালটা অস্ট্রেলিয়ার সাথে ভারত হেরেছিল। কিন্তু খেলাটা ভারতের আমেদাবাদের নরেন্দ্র-মোদী স্টেডিয়ামে হয়নি। কাজেই একটু হলেও .. দেখাযাক।